কুরবানির ইতিহাস
কুরবানির ইতিহাস
কুরবানি হলো ইসলাম ধর্মের অন্যতম একটি ইবাদত যা প্রতি বছর নেসাব পরিমান মালের মালিকের উপর ওয়াজিব। অর্থাৎ( যারা জিলহজ্জ মাসের দশ, এগারো, ও বারো তারিখে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ ব্যতিত অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা এর সমমূল্যের মালিক হয়, তাহলে তাদের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কোরবানির ইতিহাস খুবই প্রাচীন। এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কুরবানি পালিত হয়েছে।
এটি ‘শাআইরে ইসলাম’ তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এর মাধ্যমে ‘শাআইরে ইসলামের’ বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া গরিব-দুঃখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহ ও তার রাসুলের শর্তহীন আনুগত্য, ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষাও আছে কুরবানিতে। হজরত আদম আলাইহিস সালামের যুগ থেকেই কোরবানির বিধান চলে আসছে। পৃথিবীর প্রথম কোরবানি হজরত আদম আলাইহিস সালামের দুই ছেলে হাবিল ও কাবিলের কোরবানি পেশ করার কথা আমরা মহাগ্রন্থ আল-কোরআন থেকে জানতে পারি। মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে বলেন-
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَاناً فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنْ الآخَرِ قَالَ لأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنْ الْمُتَّقِينَ
অর্থ:
‘আদমের দুই পুত্রের (হাবিল ও কাবিলের) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হল এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হল না। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন।’ (সুরা মায়েদা: আয়াত ২৭)
হাবিল প্রথম মানুষ যে আল্লাহর জন্য একটি পশু কুুরবানী করেন । ইবনে কাসির বর্ণনা করেছেন যে, হাবিল একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদন করে। আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতি ছিল যে আগুন আকাশ থেকে নেমে আসবে এবং গ্রহণযোগ্য কুরবানী গ্রহণ করবে। তদনুসারে, আগুন নেমে আসে এবং হাবিলের জবেহকৃত পশুটির কুরবানী গ্রহণ করে। অন্যদিকে কাবিলের ফসল কুরবানী প্রত্যাখ্যান করে। কাবিল এই ঘটনায় ঈর্ষান্বিত হয় ও সামাজিভাবে অপমানবোধ করে কুরবানী কবুল না হওয়ার বিষয়টি তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে, যা মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত। কাবিল তার কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হওয়ায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেননি।
১: প্রত্যেক জাতির জন্যই ছিল কোরবানির বিধান।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكاً لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرْ الْمُخْبِتِينَ – الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَالصَّابِرِينَ عَلَى مَا أَصَابَهُمْ وَالْمُقِيمِ الصَّلاةِ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ
‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির বিধান দিয়েছি; যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণ সবরূপ যে সব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি সেগুলির উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য। সুতরাং তোমরা তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর। আর সুসংবাদ দাও বিনীতগণকে; যাদের হৃদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে; যারা তাদের বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রুজি দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা হজ: আয়াত ৩৪-৩৫)
ইব্রাহীম আঃ এর ত্যাগ:
যে বান্দা আল্লাহর যত বেশি নৈকট্যতা পেয়েছে তার উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে তত বেশি বালা- মসিবত, পরিক্ষা – নিরীক্ষা এসেছে।
ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তা’আলার রাসুল হযরত ইব্রাহীম কে স্বপ্নযোগে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেনঃ “তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি কর”। ইব্রাহীম আঃ স্বপ্নে এ আদেশ পেয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন। পুনরায় তিনি একই স্বপ্ন দেখলেন। ইব্রাহীম আঃ আবার ১০০টি উট কোরবানি করেন।
এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.) ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যখন ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তাঁর পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য যখন গলায় ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তাঁর পুত্র ইসমাইল আঃ এর পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কোরবানির আদেশ হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন-
فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانظُرْ مَاذَا تَرَى قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ سَتَجِدُنِي إِن شَاء اللهُ مِنَ الصَّابِرِينَ- فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ- وَنَادَيْنَاهُ أَنْ يَا إِبْرَاهِيمُ- قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا إِنَّا كَذَلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ- إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْبَلَاء الْمُبِينُ- وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ – وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ
‘এরপর সে (ইসমাঈল) যখন বাবার (ইবরাহিমের) সঙ্গে চলা-ফেরার (কাজ করার) বয়সে উপনীত হল, তখন ইবরাহিম তাকে বলল, ‘হে ছেলে! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কী? দেখ।’ সে বলল, ‘হে বাবা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা পালন করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলরূপে পাবেন।’ অনন্তর বাবা-ছেলে উভয়েই যখন আনুগত্য প্রকাশ করলো এবং ইবরাহিম তাকে জবেহ করার জন্য অধোমুখে শায়িত করলো; তখন আমি ডেকে বললাম, ‘হে ইবরাহিম!
তুমি তো স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালে। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমি তার পরিবর্তে জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু দিয়ে তাকে মুক্ত করে নিলাম। আর তার জন্য এ বিষয়টি পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম।’ ( সুরা সাফফাত: আয়াত ১০২-১০৮)
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ইসলাম ধর্মে পশু জবাই করে কুরবানী করা ওয়াজিব।
কোরবানির মহাত্ম ও ফজিলত :
পশু কোরবানির মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর প্রিয় হয় বা কাছাকাছি হয়। কোরবানি ইসলামের বিধান, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। কোরবান বা আজহাকে ইসলামি বিধান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যা পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসবকালে আল্লাহ তাআলার জন্য পশু উৎসর্গের মাধ্যমে প্রতিপালন করতে হয়। পবিত্র কোরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় কোরবানি সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ওঠে এসেছে। তাহলো-
১. وَ اَتِمُّوا الۡحَجَّ وَ الۡعُمۡرَۃَ لِلّٰهِ ؕ فَاِنۡ اُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ وَ لَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَکُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡهَدۡیُ مَحِلَّهٗ ؕ فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ بِهٖۤ اَذًی مِّنۡ رَّاۡسِهٖ فَفِدۡیَۃٌ مِّنۡ صِیَامٍ اَوۡ صَدَقَۃٍ اَوۡ نُسُکٍ ۚ فَاِذَاۤ اَمِنۡتُمۡ ٝ فَمَنۡ تَمَتَّعَ بِالۡعُمۡرَۃِ اِلَی الۡحَجِّ فَمَا اسۡتَیۡسَرَ مِنَ الۡهَدۡیِ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ فِی الۡحَجِّ وَ سَبۡعَۃٍ اِذَا رَجَعۡتُمۡ ؕ تِلۡکَ عَشَرَۃٌ کَامِلَۃٌ ؕ ذٰلِکَ لِمَنۡ لَّمۡ یَکُنۡ اَهۡلُهٗ حَاضِرِی الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ
‘আর হজ ও উমরা আল্লাহর জন্য পূর্ণ কর। এরপর যদি তোমরা আটকে পড় তবে যে পশু সহজ হবে (তা জবেহ কর)। আর তোমরা তোমাদের মাথা মুন্ডন করো না, যতক্ষণ না পশু তার যথাস্থানে পৌঁছে। আর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ কিংবা তার মাথায় যদি কোনো কষ্ট থাকে তবে রোজা কিংবা সদাকা অথবা পশু জবেহ এর মাধ্যমে ফিদয়া দেবে।
আর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যে ব্যক্তি ওমরার পর হজ সম্পাদনপূর্বক তামাত্তু করবে, তবে যে পশু সহজ হবে, তা জবেহ করবে। কিন্তু যে তা পাবে না তাকে হজে তিন দিন এবং যখন তোমরা ফিরে যাবে, তখন সাত দিন রোজা পালন করবে। এই হল পূর্ণ দশ। এই বিধান তার জন্য, যার পরিবার মাসজিদুল হারামের অধিবাসী নয়। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখো! নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৬)
. لَنۡ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوۡمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰکِنۡ یَّنَالُهُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرَهَا لَکُمۡ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُحۡسِنِیۡنَ – اِنَّ اللّٰهَ یُدٰفِعُ عَنِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ کُلَّ خَوَّانٍ کَفُوۡرٍ
‘কিন্তু মনে রেখো! কোরবানির গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেওয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবি! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩৭-৩৮)
১:-রাসুল সা. হাদিসে বলেন, হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, কুরবানির দিন পশু কুরবানির চাইতে আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় আর কোন আমল, নেই। কেয়ামতের দিন জবেহ করা পশুকে তার শিং ও খুরসহ হাজির করা হবে। কুরবানির জন্তুর রক্ত জমিনে পড়ার আগেই তা আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা খোলা মনে এবং সন্তুষ্টি চিত্তে কুরবানি কর। (মেশকাত শরীফ)
২: হাদিসে ইরশাদ হয়েছে,হজরত জায়দ ইবনে আকরাম বলেন, সাহাবায়ে কেরাম নবী করিম (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করেন, কুরবানি কী? নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কুরবানি হলো তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর সুন্নত।’এতে আমাদের সওয়াব কী? নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কুরবানির পশুর প্রত্যেকটি পশমের বদলায় একটি করে সওয়াব রয়েছে। ভেড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ভেড়ার প্রত্যেকটি পশমের বদলায়ও একটি করে সওয়াব রয়েছে।( মুসনাদে আহমাদ)
কুরবানির সময়সীমা :
ইসলামে হিজরী সনের জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কুরবানী করার সময় হিসেবে নির্ধারিত। এ দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা কুরবানী দেয় যার অর্থ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার খুুুশীর জন্য নির্দিষ্ট দিনে একটি পশুকে জবেহ করা।
কোরবানির জন্তু হল গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু আর তা হলো:—– উঁট, গরু, ছাগল, দুম্বা বা মেষ। আর কুরবানীতে একটি ছাগল, মেষ বা দুম্বা একজনের পক্ষ হতে যথেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে একটি উঁট বা গরু সাতজনের পক্ষ হতে যথেষ্ট হবে।
হযরত জাবির (রা.)-এর বর্ণিত হাদীস; তিনি বলেন, আমাদেরকে আল্লাহর রসূল (সা.) উঁট ও গরুর ক্ষেত্রে সাতজনকে একটি পশুতে ভাগ নিতে নির্দেশ করেন।
কুরবানীর পশুতে যে সব গুণ থাকা আবশ্যক:
১। পশুর শরীয়াত নির্ধারিত বয়স হওয়া। আর তা হচ্ছে, উঁটের বয়স পাঁচ বছর সম্পূর্ণ হওয়া, গরুর বয়স দুই বছর সম্পূর্ণ হওয়া, ছাগলের বয়স এক বছর সম্পূর্ণ হওয়া, মেষ বা দুম্বার বয়স ছয় মাস পূর্ণ হওয়া। এর কম বয়সের হলে তা কুরবানীতে যথেষ্ট হবে না। এর *** এ বিষয়ে নবী (সা.) এর হাদীস:
لَا تَذْبَحُوا إِلَّا مُسِنَّةً إِلَّا أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنْ الضَّأْنِ
তোমরা দাঁতা পশু ব্যতীত অন্য কোন পশু (কুরবানীতে) যবহ করবে না। তবে যদি তোমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে তাহলে দুম্বা বা মেষের জায্’আ (যার বয়স ছয় মাস) যবহ্ করবে।
২। চারটি দোষ হতে কুরবানীর পশুর মুক্ত হওয়া, যা থেকে নাবী (সা.) কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রে বেঁচে থাকতে বলেছেন। আর তা হলো:
১—স্পষ্ট কানা হওয়া। আর দুই চোখের অন্ধ হওয়া আরো বড় দোষ, তাই তা যথেষ্টে হবে না।
২—স্পষ্ট রোগী হওয়া, যেমন চুলকানী-পাচড়া বা অন্য কোন ব্যধীতে আক্রান্ত হওয়া।
৩:—স্পষ্ট খোঁড়া হওয়া এবং এমন অচল হওয়া যা চলতে পারে না। তাই কোন একটি পা কাটা হওয়া আরো বড় দোষ।
৪:—আর এমন দুর্বল হওয়া যার শরীরে কোন মাংস নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কুরবানির মাধ্যমে তার নৈকট্যতা অর্জন করার তাওফিক দান করুক। আমিন ইয়া রাব্বাল আলামীন More