তথ্য ও প্রযুক্তি

বিকাশ ডিপিএস কি?

বিকাশ ডিপিএস

আপনি কি বিকাশ ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আজকের পোস্ট থেকে বিকাশ ডিপিএস কি, খোলার নিয়ম এবং সুবিধা জেনে নিন। সব সময় বিকাশ আমাদের মাঝে নতুন নতুন ফিচার নিয়ে হাজির হয়। ঠিক তেমনি ভাবে বর্তমানে বিকাশের নতুন একটি ফিচার হলো ডিপিএস। বিকাশের ডিপিএস নিয়ে অনেক গ্রাহকের বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন রয়েছে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমরা বিকাশ ডিপিএস কি, বিকাশ ডিপিএস খোলার নিয়ম এবং সুবিধাসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

বিকাশ ডিপিএস কি?

বিকাশ ডিপিএস হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী একটি সঞ্চয়ী প্রকল্প যা সম্পূর্ণ বিকাশ গ্রাহকদের জন্য। বিকাশের এই ডিপিএস এর মাধ্যমে গ্রাহকরা সাপ্তাহিক / মাসিক টাকা জমা করতে পারবে এবং মেয়াদ শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবে লাভ সহ। আর মজার বিষয় হচ্ছে, বিকাশের ডিপিএসের টাকা উত্তোলন করতে ১ টাকাও খরচ হবে না। অর্থাৎ, বিকাশ থেকে ডিপিএস এর টাকা তুলতে ক্যাশ আউট চার্জ একদম ফ্রী। 

বিকাশ ডিপিএস খুলতে যা যা লাগবে?

বিকাশ ডিপিএস একাউন্ট খুলতে খুব বেশি কিছু লাগে না। একটি সক্রিয় বিকাশ একাউন্ট এবং ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন। এছাড়া বিকাশ ডিপিএস একাউন্ট খুলতে অবশ্যই একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে। 

বিকাশ ডিপিএস খোলার নিয়ম ২০২৪:

বিকাশ ডিপিএস বিকাশের নতুন একটি সেবা। এ কারণে অধিকাংশ গ্রাহক বিকাশ ডিপিএস খোলার নিয়ম জানেন না। আপনিও যদি বিকাশ ডিপিএস খুলতে না পারেন তাহলে নিচের স্টেপ গুলো ফলো করুন। 

স্টেপ ১ঃ প্রথমে বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন। তারপর বিকাশ অ্যাপের হোম পেজ থেকে “সেভিংস” বাটনে ক্লিক করুন।

স্টেপ ২ঃ এখন “নতুন সেভিংস খুলুন” অপশনে প্রেস করে “ডিপিএস” অপশন বেছে নিন।

স্টেপ ৩ঃ এরপর ডিপিএসের উদ্দেশ্য নির্বাচন করে ডিপিএসের মেয়াদকাল ৬ মাস অথবা, ১/২/৩/৪ বছর এবং টাকা জমা দেওয়ার ধরন সাপ্তাহিক/মাসিক নির্বাচন করুন।     

স্টেপ ৪ঃ তারপর যে পরিমাণ টাকা জমা করবেন তার পরিমাণ সিলেক্ট করুন। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের তালিকা থেকে পছন্দের একটি স্কিম নির্বাচন করে পরবর্তী অপশন ক্লিক করুন।

স্টেপ ৫ঃ এখন আবেদনকারীর নমিনি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে দিন। 

স্টেপ ৬ঃ নিয়ম ও শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে “সম্মতি” বাটনে ক্লিক করে দিন। এরপর বিকাশ একাউন্টের পিন নাম্বার দিন। পরিশেষে স্ক্রিনের নিচের লাল অংশে ট্যাপ করে ধরে রাখুন।

ব্যাস, বিকাশ ডিপিএসের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো। কিছুক্ষণ পর বিকাশ থেকে এসএমএসের মাধ্যমে ডিপিএস একাউন্ট কনফার্ম করা হবে।  এছাড়া বিকাশ DPS খোলা সংক্রান্ত সকল ধরনের সহযোগিতা পেতে তাদের হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন। তাছাড়া আপনার নিকটে যদি বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থাকে তাহলে সেখানেও যোগাযোগ করতে পারেন। 

বিকাশ ডিপিএস সুদের হার:

বিকাশ ডিপিএস সুদের হার ৩%। বিকাশ একাউন্টে ডিপিএসের মাধ্যমে টাকা জমিয়ে বছরে ৩% পর্যন্ত ইন্টারেস্ট পেতে পারেন। এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে https://www.bkash.com/help/interest-on-savings ক্লিক করুন।

বিকাশ ডিপিএস কতটুকু নিরাপদ:

অনেক গ্রাহক জানতে চান বিকাশ ডিপিএস কতটুকু নিরাপদ। সত্যিকার অর্থে বিকাশ ডিপিএস ১০০% নিরাপদ। কারণ বিকাশ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংকের সাথে অংশীদারিত্ব করে। যার অর্থ, বিকাশে নয় আপনার টাকাগুলো ঐ ব্যাংকগুলোতেই জমা থাকে।

এছাড়া বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং ব্রাক ব্যাংকের একটি প্রতিষ্ঠান। তাই এখানে অনিরাপত্তার কথায় আসে না।

বিকাশ ডিপিএস এর সুবিধা সমূহ;

বর্তমানে সময়ে আমাদের দেশে আর্থিক নিরাপত্তা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই প্রেক্ষিতে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ডিপিএস সেবাটি ইতিমধ্যে চালু করেছে। একজন বিকাশ গ্রাহক বিকাশের এই ডিপিএস সেবার সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। 

বিকাশ ডিপিএস এর সুবিধা অনেক। যা বলতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে। তারপরেও আপনাদের কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। বিকাশ ডিপিএসের সবথেকে বড় সুবিধা হল একাউন্ট খোলার কোন ঝামেলা নেই। আপনার যদি একটি বিকাশ একাউন্ট থাকে তাহলে ২ মিনিটের মধ্যে নিজেই ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারবেন। 

আপনার পছন্দমত সাপ্তাহিক বা মাসিক টাকা জমা করতে পারবেন। তাছাড়া টাকার পরিমাণ প্রতি সপ্তাহে ২৫০/৫০০/১,০০০/২,০০০/৫,০০০ টাকা এবং প্রতি মাসে ৫০০/১,০০০/২,০০০/৩,০০০ টাকা। যা চাকরিজীবীদের থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পক্ষেও জমা করা সহজ হবে। 

ডিপিএসের সময়কাল ৬ মাস থেকে শুরু করে ১,২,৩ ও ৪ বছর পর্যন্ত। এর আগে এরকম সময়কাল অন্য কোন প্রতিষ্ঠান দেয়নি। বিকাশ ডিপিএসের টাকা জমা দেওয়ার জন্য ব্যাংক যেতে হবে না। আপনার ডিপিএসের টাকা অটোমেটিক একাউন্টে যুক্ত হয়ে যাবে। এজন্য বিকাশ থেকে অটো ডেবিট অপশন চালু করুন। 

আমাদের দেশের অনেক ব্যাংক রয়েছে যেখানে ডিপিএসের টাকা তুলতে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। তারপরেও ডিপিএসের টাকা আমরা হাতে পাইনা। কিন্তু বিকাশের ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ণ অন্যরকম। কারণ বিকাশে জমানো ডিপিএসের টাকা তুলতে কোন জায়গায় যেতে হবে না। আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকেই ডিপিএসের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। 

এখন আপনি হয়তো প্রশ্ন করবেন, বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলন করলে তো ক্যাশ আউট চার্জ কাটে। তাহলে ডিপিএসের টাকা তুলতেও কি টাকা খরচ হবে?

না, বিকাশের ডিপিএসের টাকা উত্তোলন করতে কোন রকম টাকা খরচ হবে না। আপনার ডিপিএস এ যত টাকা হয়েছে ঠিক তত টাকায় পাবেন। 

বিকাশ ডিপিএসের সব থেকে বড় সুবিধা হল নিরাপত্তা। বিকাশে টাকা জমালে আপনার টাকা আপনারই থাকবো। কারণ বিকাশ একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।  

পরিশেষে,আজকে আমরা জানলাম, বিকাশ ডিপিএস কি এবং বিকাশ ডিপিএস খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এছাড়া আপনার যদি আজকের আর্টিকেল নিয়ে কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করতে পারেন। এরকম আরো নিত্য নতুন মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

Read More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button