খোলা কলামসম-সামীয়ক

কে এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি?

কে এই বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি?

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির বংশ পরিচয় ও শিক্ষা :

তাপসী ঊর্মি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের নসিবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা মো. ইসমাইল হোসেন একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। যদিও তার বাড়ি নেত্রকোনায়, তবে তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহে বসবাস করছে। মাঝে মাঝে তারা নেত্রকোণা যান।


ঊর্মি মেধাবী ছাত্রী ছিলেন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে ২০২২ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তিনি দুই বোন এবং এক ভাইয়ের মধ্যে বড়। তার ছোট ভাই বর্তমানে জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ঊর্মির বাবা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন এবং বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। তবে, তার পরিবার রাজনীতির সঙ্গে কখনো সক্রিয় ছিল না।

ঊর্মির সাময়িকী বরখাস্তের কারণ :

ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ার পর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি নামের এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে সমালোচনা চলছে। তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। সমালোচনার কারণে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে বদলি করা হয়েছে এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ার পর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি নামের এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে সমালোচনা চলছে। তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। সমালোচনার কারণে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে বদলি করা হয়েছে এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। গত শনিবার, তাপসী একটি ফেসবুক পোস্টে লেখেনসাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে।

তিনি আরও দাবি করেন যে, এভাবে দেশের ইতিহাস মুছে ফেলা সম্ভব নয়। এই পোস্টের পর তাকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় এবং রোববার তাকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। তবে, বদলির আদেশে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।


একদিন পর, সোমবার, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে কথা বলার সময় ঊর্মি বলেন, “আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি এটাই তো যথেষ্ট। বদলি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যদি আমার চাকরি চলে যায়, সমস্যা নেই। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, এটা মীমাংসিত সত্য। রিসেট বাটন মুছে ফেলে অতীত মুছে ফেলা, এর মানে কি?”

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি যে, জুলাই গণহত্যা হয়েছে।”

ডঃ ইউনুসকে নিয়ে পোস্ট :-

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়ে তাপসী তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।
এর আগে স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে ঊর্মি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি পোস্ট দিয়েছি, এটাই তো যথেষ্ট। অনলি মি করেছি, বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’ তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির ফেসবুক আইডিতে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু পোস্টও দিয়েছেন।

ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি বরখাস্ত:

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের ওএসডি হওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। Read English Articles

আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা :

শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়া কখনোই বাক স্বাধীনতার চর্চা হতে পারে না; বরং এটি নিজেই এক ধরনের অপরাধী কর্মকাণ্ড। যে ভদ্রমহিলাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তিনি একজন দেশপ্রেমিক শহীদকে সন্ত্রাসী বলার দুঃসাহস দেখিয়েছেন। যারা এই মহিলার পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন, তারা আসলে বাক স্বাধীনতার নাম করে শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী প্রমাণের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

আল আমিন খান নামে একজন লিখেছেন, সরকারি বড় কোনো দায়িত্বে থাকলে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করা যায় না, তখন জনগণের মতো নিজেকে ভাবা যায় না। এগুলো বুঝতে হয়, এটারও একটা সরকারি নিয়ম আছে, তার তো জানার কথা। আমার মনে হয় কোনো দালালি/পা চেটে চাকরি নিয়েছিল।

বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মিকে গ্রেফতার করে শাস্তি দাবি:

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। তবে শুধু বরখাস্ত নয়, তাকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

ফেসবুকে সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের নিয়ে ঊর্মির দেওয়া পোস্টের জেরে গত দুদিন ধরে নানা সমালোচনা চলছে। বরখাস্তের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ঊর্মিকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানিয়ে নানা মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা। তারা বলছেন, ঊ র্মি স্বৈরাচারের দোসর, শুধু বরখাস্ত না, তাকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আব্দুল ওয়াহেদ বলেছেন, এই নারীর (ঊর্মি) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা উচিত। এরাই দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এরা খুনির সহচর।

আব্দুল ওয়াহেদ বলেছেন, এই নারীর (ঊর্মি) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা উচিত। এরাই দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এরা খুনির সহচর।

আবু নাসির সিদ্দিকী বলেছেন, শুধু বরখাস্ত না, তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। এমএন খালেদ নামে একজন লিখেছেন, গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের পক্ষে এমন দাম্ভিকতা প্রদর্শনের দুঃসাহস যারা দেখাবেন তাদের প্রতি সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রদর্শন করতে হবে।

লোকমান হোসেন বলেন,ঊর্মিকে যোগ্য স্বৈরাচারের যোগ্য দোসর মন্তব্য করে তিনি বলেন:- প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বস্তরে এরকম দলকানা স্বৈরাচার দোসর ঘাঁপটি মেরে বসে আছে, এসব জঞ্জাল সমূলে উৎপাটন না করলে দেশটার আমূল সংস্কার সম্ভব নয়।

পরবর্তীতে স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে ঊর্মি গণমাধ্যমকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের জের ধরে তার এই প্রতিক্রিয়া।

আরো লেখা পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button