মেহমেত ফাতেহি সুলতান 17
মেহমেত ফাতেহি সুলতান 17 বাংলায় দেখুন
অনুবাদ মিডিয়া একটি বিভিন্ন ভাষার প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খবর, প্রবন্ধ, সাহিত্যকর্ম, এবং অন্যান্য সামগ্রী বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বিভিন্ন দর্শকদের জন্য বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান কনটেন্ট সরবরাহ করা। আমাদের সাইট তথ্যনির্ভর ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট প্রদানে বিশেষজ্ঞ, যা পাঠকদের জ্ঞান বৃদ্ধি ও তথ্যপ্রাপ্তিতে সহায়ক
এই ড্রামা নিয়ে আমার প্রত্যাশা ছিল অনেক উঁচুতে। প্রথম সিজন যেমন দুর্দান্ত ছিল, ট্রেলারের পর আশা আরও বেড়ে গিয়েছিল। যখন নতুন পর্ব এলো, ভাবলাম কেমন হবে—কিন্তু যা পেলাম তা আমার কল্পনার থেকেও অনেক বেশি ভালো।
প্রথম পর্ব শুরু হয় কনস্টান্টিনোপলের পতনের দৃশ্য দিয়ে, যা দেখানোর ধরণ দারুণ। এরপর আসে সুলেমান পাশার অসাধারণ এন্ট্রি। দেখানো হয়, কীভাবে তিনি এডমিরাল হয়ে উঠেছিলেন। এখানে চরিত্রগুলোর প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে—তাদেরকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলানো হয়নি যেখানে তারা কেবল নির্যাতনের শিকার।
সুলেমান পাশাকে এতটাই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, তার শৈশবের দৃশ্যগুলো আলাদা করে দারুণভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। তার খ্রিস্টান ভাই রিজোর সাথে পুনর্মিলনের দৃশ্যটিও বেশ আবেগপূর্ণ। আর সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহের অভিনয়, আগের মতোই মুগ্ধকর। সিংহাসনে বসে তার পাশাদের কথা শোনা এবং সেই মিষ্টি হাসি—এই হাসি এতই আন্তরিক যে, আপনি না দেখলে বুঝতেই পারবেন না। আমাদের হাসি তো কেবল দাঁত বের করা, কিন্তু তার হাসি সত্যিকার অর্থেই হৃদয়গ্রাহী।
এছাড়া, জান্দারলির চরিত্রও প্রশংসার দাবিদার। তার কণ্ঠে দৃঢ়তা, কথায় মাধুর্য, এবং সুলতান মুহাম্মদের সঙ্গে তার সম্পর্ক দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তার মধ্যে যেমন বুদ্ধিমত্তা আছে, তেমনি সাহসিকতা। সুলতানের পাশে তার বিশ্বস্ত পাশারাই দাঁড়ায়, কোনো অপ্রাসঙ্গিক চরিত্র নয়।
ইবনে আরাবির ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতা একটি বাইজেন্টাইন চরিত্রে দুর্দান্ত কাজ করেছেন। আর সুলতান ফাতেহের শত্রুদের সামনে দাঁড়িয়ে শাসন করার ক্ষমতা এতটা বাস্তবিকভাবে দেখানো হয়েছে যে, যে কেউ তাতে মুগ্ধ হবে। মুস্তাফার পক্ষ বদলানোর ঘটনাও অত্যন্ত কৌশলীভাবে দেখানো হয়েছে। তুর্কি ঐতিহ্যের আসল রূপ তুলে ধরা হয়েছে—কোনো অযথা দৃশ্য যোগ না করেই।
সবশেষে, আপনি হয়তো এই ড্রামা নিয়ে মতবিরোধ করবেন, কিন্তু এটাকে উপেক্ষা করা কঠিন যে ড্রামাটি কীভাবে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দিকগুলো তুলে ধরেছে। যখন বিপদ আসে, মুসলিমরা তাদের সব দ্বন্দ্ব ভুলে কীভাবে একত্রিত হয়, কীভাবে জ্ঞান ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়, এবং সুলতানের বিজ্ঞানপ্রেম—এগুলো এতটাই ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে তা না দেখে থাকা যায় না।
কিছু দৃশ্য সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। জান্দারলি খলিল পাশার ভাতিজার শাহাদাত, যেখানে সুলতান ফাতেহ তাকে আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত করেন, এবং খায়রুদ্দিনের মৃত্যুর সময়কার প্রশান্তি—এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। সৈনিক ওসমানের আত্মোৎসর্গ এবং মুস্তাফার সেই স্মরণীয় কথা, “তুমি মরলে যাতে আমরা বাঁচতে পারি”—এই সব মুহূর্ত একজন মুসলিম হিসেবে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।